মুরাদনগরে দরজা ভেঙে নারীকে ধর্ষণের অভিযোগে প্রধান আসামিসহ গ্রেপ্তার ৫
মামলার এজাহার ও ভুক্তভোগী ওই নারীর সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, হিন্দু ধর্মাবলম্বী ওই নারী প্রায় ১৫ দিন আগে স্বামীর বাড়ি থেকে বাবার বাড়িতে বেড়াতে আসেন। গত বৃহস্পতিবার রাতে বাবার বাড়ির পাশে পূজা হচ্ছিল। পরিবারের সদস্যরা সেখানে গিয়েছিলেন; তিনি বাড়িতে একা ছিলেন। আনুমানিক ১০টার দিকে ফজর আলী (৩৮) নামের এক ব্যক্তি তাঁর বাবার বাড়ি গিয়ে ঘরের দরজা খুলতে বলেন। এ সময় তিনি দরজা খুলতে অস্বীকৃতি জানান। একপর্যায়ে ওই ব্যক্তি ঘরের দরজা ভেঙে ভেতরে ঢুকে তাঁকে ধর্ষণ করেন।
ওই নারীর পাশের বাড়ির এক বাসিন্দা বলেন, ‘বৃহস্পতিবার রাতে ওই বাড়িতে অনেক শব্দ হচ্ছিল। আমি ভয়ে দৌড়ে গিয়ে লোকজন ডেকে নিয়ে আসি। লোকজন গিয়ে দেখেন দরজা ভাঙা। পরে আমরা ওই নারীকে উদ্ধার করি। এ সময় কিছু লোক তাঁকে মারধর ও ভিডিও করেন। পরে তাঁরা বুঝতে পারেন ওই নারীর ওপর নির্যাতন চালানো হয়েছে। তখন লোকজন ফজর আলীকে মারধর করেন। পরে তাঁকে হাসপাতালে নেওয়া হয়।’ ওই হাসপাতাল থেকে ফজর আলী পালিয়ে যান। পরে আজ তাঁকে ঢাকার সায়েদাবাদ থেকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ।
এ ঘটনায় একটি ভিডিও গতকাল শনিবার রাতে ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়ে। এরপর এ নিয়ে সমালোচনা শুরু হয়। মুরাদনগর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা জাহিদুর রহমান প্রথম আলোকে বলেন, ওই ঘটনায় ভুক্তভোগী নারী থানায় মামলা করার পর অভিযানে নামে পুলিশ।
চিৎকার শুনে ছুটে আসা স্থানীয়রা ধর্ষণের শিকার নারীকেই মারধর করে
কুমিল্লার মুরাদনগরে দরজা ভেঙে ঘরে ঢুকে এক নারীকে ধর্ষণের ঘটনায় মামলার পর মূল অভিযুক্তসহ পাঁচজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।
ভুক্তভোগী পুলিশকে জানিয়েছেন, ঘটনার পর তিনি যখন সাহায্য চাচ্ছিলেন, তখন তাঁকে মারধর করা হয়। তাঁর ভিডিও ধারণ করা হয়, যা পরে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে।
পুলিশ বলছে, ভিডিওটি ছড়িয়ে পড়ার পর বিষয়টি তাদের নজরে আসে। এরপর তারা অভিযান চালিয়ে মূল অভিযুক্ত ফজর আলীকে (৩৮) ঢাকার সায়েদাবাদ থেকে গ্রেপ্তার করে। ভিডিও ছড়িয়ে দেওয়ার অভিযোগে আরও চারজন—মো. সুমন, রমজান আলী, মো. আরিফ ও মো. অনিককে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। মারধর করা ব্যক্তিদের শনাক্তের চেষ্টা চলছে।
ভুক্তভোগী নারীর ভাষ্যমতে, তিনি প্রায় ১৫ দিন আগে সন্তানদের নিয়ে বাবার বাড়িতে বেড়াতে আসেন। গত বৃহস্পতিবার রাত ১০টার দিকে অভিযুক্ত ফজর আলী তাঁর বাড়িতে গিয়ে দরজার বাইরে থেকে ডাক দেন। দরজা না খোলায় ফজর আলী দরজা ভেঙে ভেতরে ঢুকে তাঁকে ধর্ষণ করেন।
ধর্ষণের পর ওই নারী চিৎকার করলে আশপাশের লোকজন ছুটে আসে। কিন্তু তারা প্রকৃত ঘটনা না জেনে উল্টো নারীকেই দোষারোপ করে মারধর শুরু করে এবং সেই অবস্থায় ভিডিও ধারণ করে। পরে তারা বুঝতে পারে, ওই নারী আসলে ধর্ষণের শিকার। তখন স্থানীয়রা ফজর আলীকে আটক করে মারধর করে এবং পরে হাসপাতালে নিয়ে যায়। ফজর আলী হাসপাতাল থেকে কৌশলে পালিয়ে যান।
পরদিন শুক্রবার রাতে সেই ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে। এ নিয়ে তোলপাড় হয়। এরপর পুলিশ ওই নারীকে থানায় যেতে উদ্বুদ্ধ করে। গতকাল শনিবার রাতে তিনি মুরাদনগর থানায় মামলা করেন।
স্থানীয়রা বলছে, ওই নারী ধর্ষণের শিকার হলেও তারা শুরুতে বিষয়টি না বুঝে ভুল করেছে। পরে যখন আসল ঘটনা জানতে পারে, তখন লজ্জায় পড়ে। যারা ভিডিও করে ছড়িয়ে দিয়েছে, তাদেরও বিচারের দাবি জানিয়েছে স্থানীয়রা।
- কুমিল্লার মুরাদনগরে নারী ধর্ষণ মামলায় মূল অভিযুক্ত ফজর আলীসহ ৫ জনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। তবে হিন্দু-মুসলিম সম্প্রদায়ের উত্তেজনা এড়াতে মামলাটি প্রত্যাহারের ইঙ্গিত দিয়েছেন, ভুক্তভোগী। আর ধর্ষণ ও ভিডিও ছড়ানোর জন্য দায়ীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি চেয়েছেন, এলাকাবাসী
মুরাদনগর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) জাহিদুর রহমান বলেন, ‘প্রথমে ওই নারী থানায় অভিযোগ করেননি। ভিডিও ভাইরাল হওয়ার পর আমরা বিষয়টি জানতে পারি এবং তাঁকে সহায়তা করি। তাঁর ডাক্তারি পরীক্ষা সম্পন্ন হয়েছে। গ্রেপ্তার ব্যক্তিদের রিমান্ডে এনে জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে।
মুরাদনগরে ধর্ষণকাণ্ড; কে কাকে শায়েস্তা করলো? পরিকল্পনা কার?
মুরাদনগরে ধ'র্ষ'ণে'র ঘটনায় মূল আসামিসহ ৫ জন গ্রেপ্তার






মুরাদনগরের ঘটনায় যা জানাল পুলিশ সুপার









কুমিল্লার মুরাদনগরের ধর্ষণের ঘটনায় ভিডিও ভাইরাল, গ্রেফতার পাঁচ জন
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন